সংযোগ২৪.কম:: কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা সদকী ইউনিয়নের দড়ি মালিয়াট গ্রামে অবস্থিত নিজ বসতবাড়ির পাশে পতিত জমিতে সবজি চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন অবসরপ্রাপ্ত মাদরাসা শিক্ষক মোঃ আজিম উদ্দিন।
বসত বাড়ির পাশের পতিত ও অনাবাদি জমিতে মাটি ফেলে জায়গা ভরাট করে সবজি চাষ শুরু করেন তিনি।
নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবেশি ও আত্মীয় স্বজনদেরকেও প্রায় প্রতিদিন সবজি দিয়ে থাকেন। প্রায় ১০ প্রকারের সবজি আছে তার বাগানে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোঃ আজিম উদ্দিন বিষমুক্ত সবজি বাগান গড়ে তুলেছেন। সবুজে ঘেরা সবজি ক্ষেত। পতিত জমিতে গড়ে তোলা বাগানে তার সবজি ক্ষেতে শুধুই যে সবজি রয়েছে তা নয়। সবজির পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফল, ফুল, মশলা ও ঔষধি জাতীয় বৃক্ষ।
সবজি গাছের মধ্যে রয়েছে, পেঁপে, লাল শাক, পুই শাক, বেগুন, পালং শাক, ঢেড়শ, লাউ, কিছুজমির কিছু অংশ সরিষার আবাদও চোখে পড়লো। মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে, ধনিয়া, মরিচ, হলুদ ও টমেটো।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফুলের মধ্যে গাঁদা, মোরগ, নয়ন তারা ফুলের গাছ এবং ফলের মধ্যে রয়েছে আম, জাম, পেয়ারা, লেবুসহ কয়েকটি ফলের গাছ। তাছাড়া ঔষধি গাছ পুঁদিনা পাতা, অ্যালোভেরা, তুলসী গাছও রয়েছে।
বাড়ির পাশের এই পতিত জমিতে সবজি চাষি এই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ আজিম উদ্দিন বলেন, অনেক আগ থেকেই আমার সবজি চাষের প্রতি আগ্রহ বেশি। বাড়ির পাশে বিভিন্ন ধরনের ফল, ফুলের গাছ লাগাতাম। বয়স হয়েছে। বসে থাকি। তাই এই সবজি বাগান পরিচর্যা করে সময় পার করা যায়। বেশ ভালো লাগে, সময়টাও কেটে যায়।
তিনি বলেন, জমিতে সার, বীজ বপন, পানি সেচ দেয়া থেকে শুরু করে ফসল রক্ষণাবেক্ষণের সব আমি করে থাকি।
সবচেয়ে বড় বিষয় নিজের ক্ষেতে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে নিজের পরিবারকে খাওয়াতে পারছি। ছেলে-বউমারা শহরে থাকেন। মাঝে মাঝে তারা সহ নাতীরা আসেন গ্রামে। বাগান দেখে তাদের ভালো লাগে। আবার যাওয়ার সময় সবজি ও তরকারী তাদের ব্যাগ ভরে দেই, খুশী হয় তারা।
তার ছেলে সাইদুল বারী টুটুল জানান, শহরের খেয়া রেঁস্তোরার জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেন। মাঝে মাঝে গ্রামে যান পরিবার পরিজন নিয়ে।
তিনি বলেন, বাবাকে আমি খুবই ভালোবাসি। যদিও বাবা মাঝে মাঝে শহরে আমাদের সাথে থাকেন। বাবার বয়স হয়েছে। গ্রামের মায়া কাটেনি। গ্রামের বাড়ীতেই থাকেন। বাবার হাতে গড়ে তোলা সবজি বাগান দেখে বেশ ভালো লাগে। বিষমুক্ত এই সবজির বাগান পরিচর্যা করতে বেশ ভালো লাগে তার। কারণ বর্তমান বাজারের প্রতিটি সবজিতেই দেয়া থাকে মাত্রারিক্ত সার ও কীটনাশক, যা মানুষের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই বিষমুক্ত এই সবজি আমরাও নিয়ে আসি।
কুমারখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে পতিত ও অনাবাদি এক ইঞ্চি জমিও বাদ থাকবে না। কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহয়তায় দেওয়া হয়েছে অনেক কৃষককে। শুনেছি তিনি উদ্যোগী ও পরিশ্রমী মানুষ। এই বৃদ্ধ বয়সেও সবজি উৎপাদন করে ইতিমধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি। তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবে কৃষি অধিদপ্তর।