রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:৩১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ শিরোনাম :
মোঃ নাছিম খান, যেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের বাতিঘর কুষ্টিয়ায় শ্যামলী পরিবহনের ধাক্কায় প্রাণ হারালো কিশোর নুর ইসলাম ঈদযাত্রার টিকিট কাটার ভিড় নেই গাবতলীতে ভালো আছেন সোমালিয়ায় জিম্মি নাবিকেরা : হাছান মাহমুদ কুষ্টিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ২ হাজারেরও বেশী পানচাষি ক্ষতিগ্রস্ত কুষ্টিয়ায় ১৯৩৬ বোতল ফেনসিডিল, ১টি বিদেশী পিস্তল ও ০৮ রাউন্ড গুলি সহ গ্রেফতার – ১ ভেড়ামারায় বরাদ্দকৃত রাস্তার জায়গায় নতুন করে দোকান ঘর নির্মাণ কুমারখালীতে হাসুয়ার আঘাতে আহত ৪ ছাত্রলীগ কর্মী  মাশরাফিসহ ৫ জন জাতীয় সংসদের হুইপ হলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার ছয় দপ্তর বণ্টন দেশে গত ৪ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ১৮.৫ শতাংশ খোকসা অনলাইন প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমদোন কুষ্টিয়ায় নিরাপত্তা চেয়ে এলাকাবাসীর মানববন্ধন ও স্বারকলিপি প্রদান   নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, ৭ জানুয়ারি ভোট কুষ্টিয়ায় দিনে দুপুরে যুবকের মাথায় আঘাত করে প্রায় ৪ লাখ টাকা ছিনতাই
ঘোষণা:
সংযোগ২৪ ডটকমে আপনাকে স্বাগতম । সময়ের বহুল প্রচারিত বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য বাংলাদেশের ভিন্নধারার নিউজ পোর্টাল "সংযোগ২৪ ডটকম" । অতি অল্প দিনে পাঠক নন্দিত হয়ে উঠেছে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের লক্ষে কাজ করছে তরুণ, অভিজ্ঞ সংবাদকর্মীরা। দেশ-বিদেশে সকল খবরাখবর কারেন্ট আপডেট জানাতে দেশের জেলা, উপজেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সংবাদ প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে।  ছবিসহ জীবন বৃত্তান্ত (সিভি)পাঠাতে হবে এই ই-মেইল: nazmulkst.hossain@gmail.com , মোবাইল : ০১৭২৯-৫৫১৫৪৬

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৪৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ

ঢাকা অফিস :: / ১৮৬ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩, ৬:৪১ পূর্বাহ্ন

সংযোগ২৪.কম:: সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গনির বিরুদ্ধে ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। সেখানকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে এ অভিযোগ করেছেন। তার বিরুদ্ধে তারা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও আবেদন করেছেন। আবেদনের সাথে প্রমাণ হিসেবে তারা কিছু তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করেছেন।

শিক্ষক বদলি: সিলভার জুবিলী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শরীফা লায়লুন্নাহার নামক একজন সহকারী শিক্ষককে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে বদলি করেছেন আব্দুল গনি। ওই শিক্ষকের প্রথম যোগদান জিএন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ০২/০৭/২০০৬ তারিখে। তারপর ১১/০২/২০১৩ তারিখে বদলি হয়ে তার স্থায়ী ঠিকানা ধুলিহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান তিনি; অথচ ধুলিহর স্কুলে ০২/০৭/২০০৬ তারিখে যোগদান দেখানো হয়েছে; যা সম্পূর্ণ অসত্য। তাছাড়া তার স্থায়ী ঠিকানায় চাকুরি সত্ত্বেও বর্তমান ঠিকানাকে স্থায়ী ঠিকানা দেখানো হয়েছে। এসব করা হয়েছে টাকার বিনিময়ে। এছাড়া একই প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম করে আকলিমা খানমকে দামোরপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে বাটকেখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে; হোসনে আরা চৌধুরীকে শাখরা কোমরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কাঁঠালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং মুর্শিদা খাতুনকে কাঁঠালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আলীপুর সেন্ট্রাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। এভাবে বদলি করে আব্দুল গনি ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
নিলাম ছাড়া স্কুলের ভবন ও গাছ বিক্রি: নিলাম ছাড়া স্কুলের ভবন বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করে চলেছেন আব্দুল গনি। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বিদ্যালয়ের মেহগনি, আম, কড়ই, শিরিশ (স্থানীয় ভাষায় শিশুগাছ) বিক্রি করে অর্থ নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ফিংড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া মাটি খুঁড়লে গাছের গোড়া যাতে দেখা না যায় সেজন্য মাটি ভরাট করা হয়েছে। অবৈধভাবে ভবন ও গাছ বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
এডুকেশন ইন এমার্জেন্সির অর্থ আত্মসাৎ: ২০২১-২২ অর্থবছরে নেবাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গয়েশ্বরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিমুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগডাংগি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জিকে ইউনাইটেড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি স্কুলে বরাদ্দ আসে। ১৮নং খানপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত এডুকেশন ইন এমার্জেন্সির সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করে আবদুল গনি ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। বাকি সবকটি বিদ্যালয়ে কাজ সামান্য করা হলেও তাকে স্কুল প্রতি দিতে হয়েছে ১০ হাজার টাকা করে। এভাবে তিনি ২ দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সরকারি বরাদ্দের কাজে টাকা আদায়: ২০২১-২২ অর্থবছরে যত ধরনের বরাদ্দ এসেছে তার প্রতিটি খাত থেকে প্রথমে হিসাবরক্ষণের অফিসের নাম করে ক্ষুদ্র মেরামতের ৯২টি বিদ্যালয় থেকে ৬০০০ টাকা করে ৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা; স্লিপ থেকে ৮০০ টাকা করে ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা, সিএসএসআর থেকে ভ্যাটের নামে ৪২টি স্কুল থেকে ৩৫০০ টাকা করে ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, নিড বেজড প্লেয়িং জনতা মেটাল থেকে স্কুল প্রতি ৫৫ হাজার টাকা দরে কন্টাক্ট করান। সেখান থেকে ১২ হাজার টাকা করে ৯টি স্কুল হতে ৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন আব্দুল গনি। তাছাড়া ওয়াশব্লকের কাজ না করে তিন লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। রুটিন মেরামত থেকে স্কুল প্রতি ২ হাজার টাকা করে প্রায় ২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও তিনি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিভিন্ন ববাদ্দ হতে টাকা উত্তোলনের জন্য আপাতত স্লিপের জন্য ৮০০ টাকা করে কেটে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
উত্তরপত্র বিক্রির অর্থ আত্মসাৎ: প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ২০১৮ ও ২০১৯ সালের পুরাতন কাগজপত্র স্টোররুম থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিক্রি করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন আব্দুল গনি।
জাতীয় দিবসে অনুপস্থিত: সকল জাতীয় দিবসে অনুপস্থিত থাকেন আব্দুল গনি। পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরও তিনি জাতীয়ভাবে ঘোষণাকৃত শোক দিবসে পিকনিক করেছেন; যা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের প্রতি সবসময় একটি তাচ্ছিল্য মনোভাব তিনি পোষণ করেন এবং সরকারের উন্নয়নের অংশীদার না হয়ে বিরোধী মনোভাব পোষণ করেন।
শিক্ষার গুণগতমান ক্ষুণ্ন: আব্দুল গনি একেবারেই সময়নিষ্ঠ নন অথচ স্টাফদের বিষয়ে বিশেষ তৎপর। শিক্ষকদের সাথে তিনি গোয়ারের মতো (আগ্রাসী) আচরণ করেন। ধমক ও হুমকি দিয়ে তিনি দিন শুরু করেন।
দুটি সরকারি মটরসাইকেল একার দখলে: আবদুল গনি নিজের নামে বরাদ্দকৃত মটর সাইকেল (ঢাকা মেট্রো হ ৩৪-৬৭১৬) ব্যবহার করেন না। তিনি ডিপিইও অফিস হতে মটর সাইকেল (ঢাকা মেট্রো হ ৩৫-২১৮০ ইয়ামাহা ক্রাঙ্ক) ব্যবহার করছেন ;যা সরকারি বিধির পরিপন্থী।
দাওয়াত খাওয়া: প্রতিদিন কোনো না কোনো শিক্ষককে তিনি নাস্তা দেওয়ার জন্য বলে রাখেন। শহরের বাইরের শিক্ষক হলে তিনি নিজেই ওই জায়গায় চলে যান। এরপর দুপুরে আবার স্কুলে যান; সেখানে খাবার সেরে টিফিন ক্যারিয়ারে নিয়ে আসেন রাতের খাবার। তার বাসায় ইদানিং একাধিক সুন্দরী নারীর আনাগোনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বর্তমানে পিকনিকের নামে প্রতি স্কুলে যাওয়ার জন্য রীতিমতো ডায়েরী ব্যবহার করছেন আবদুল গনি।
অহেতুক হয়রানি: শিক্ষকরা কোনো কাজ নিয়ে এলে অহেতুক হয়রানি করে থাকেন আব্দুল গনি। ক্যানসার হওয়া মৃত্যু পথযাত্রী শিক্ষক ছুটি না পেয়ে চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অথচ বহিঃবাংলাদেশ এবং মেডিকেল ছুটি সার্ভিসবুকে এন্ট্রি না করে টাকার বিনিময়ে বেমালুম অবৈধ কাজ করে চলেছেন। কোনো শিক্ষক তার অবৈধ কাজে সহায়তা না করলে তিনি ওই স্কুলে ছুটে যান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে হয়রানি করেন। তিনি শোকজ, হুমকি-ধমকি এবং বাজে ব্যবহার করে থাকেন প্রায়শই।
শোকজ নোটিশ: চলতি দায়িত্বে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল গনি। কিন্তু তিনি চলতি দায়িত্ব লেখেন না। অন্যায়ের দোসর না হলে তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে তার অধিন সকল সকল স্ট্যাফ ও শিক্ষককে শোকজ করে থাকেন। অধিকাংশ সময় সহকর্মীদের ডেকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য সহকারে গালমন্দ করেন; যা অত্যন্ত অসহনীয়। বদলিসহ সকল আর্থিক বিষয়ে অফিসের ইউডিএ’র ফাইল নোটে স্বাক্ষর রাখার বিধান থাকলেও তিনি ইউডিএ-কে কোনো কাজে লাগান না। তার প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করেন।
দালাল শ্রেণির শিক্ষকদের সাথে বিশেষ সখ্যতা: দালালী হিসেবে কয়েকজন সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের সাথে বিশেষ সখ্যতা গড়ে তুলেছেন আব্দুল গনি। কোনো বিষয়ে চাঁদা তোলার প্রয়োজন হলে ওই শিক্ষকদের ডেকে নিয়ে নিজের পকেট ভারী করার লক্ষ্যে শতাংশ হিসেবে কাজের লাগিয়ে দেন। শিক্ষা অফিসার ৮০০ টাকা তুলতে বললে দালালরা ১০০০ টাকা করে তোলেন। ২০০ টাকা নিজেদের পকেটে রাখেন। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট এটিইও এবং প্রধান শিক্ষককে না জানিয়ে ওই সকল সহকারী শিক্ষক নিয়ে বাইরে ঘুরে বেড়ান আব্দুল গনি। ফলে বিদ্যালয়ের শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়াসহ প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ অনিয়মের বিষয়ে কেউ কথা বললে সরকারের উদাহরণ টেনে সমালোচনাসহ নেতিবাচক মন্তব্য করেন। সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে শওকত, হালিম, মনিরুজ্জামান, হাবিবুল্লাহ এবং প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে জাকির, একরাম, মাজেদ, আক্তারুজ্জামান, হাসনাত, আ. সবুর দালাল শিক্ষক হিসেবে বেশ পরিচিত। সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমি এ প্রতিবেদককে জানান, অভিযোগের কাগজপত্র যাঁচাই বাছাই করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

কুষ্টিয়া জেলা অনলাইন প্রেসক্লাব

এক ক্লিকে বিভাগের খবর